কালো চাল একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং এটি “সুপারফুড” হিসেবে পরিচিত। এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যা অন্যান্য চালের তুলনায় বেশি।
কালো চালের উপকারিতাঃ-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: কালো চাল অ্যান্থোসায়ানিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা এর গাঢ় কালো বা বেগুনি রঙের জন্য দায়ী। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং ক্যান্সার, হৃদরোগ ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন ই-ও থাকে যা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: কালো চালের অ্যান্থোসায়ানিন এবং উচ্চ ফাইবার উপাদান কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীতে প্লেক জমা রোধ করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: সাদা চালের তুলনায় কালো চালের গ্লাইসেমিক সূচক (GI) কম। এর অর্থ হলো এটি রক্তে ধীরে ধীরে গ্লুকোজ প্রবেশ করায়, যা রক্তে শর্করার আকস্মিক বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। তাই ডায়াবেটিস রোগী এবং যাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি আছে, তাদের জন্য এটি একটি ভালো খাবার।
হজমে সহায়তা করে: কালো চালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতেও সহায়ক, যা সামগ্রিক পাচনতন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: উচ্চ ফাইবার উপাদান থাকার কারণে কালো চাল খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে, যা অতিরিক্ত খাওয়া কমাতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে: কালো চালে ক্যারোটিনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা চোখের সুস্থ কোষগুলোকে রক্ষা করে, বিশেষ করে রেটিনাকে। এটি আল্ট্রাভায়োলেট (UV) বিকিরণের ক্ষতিকারক প্রভাব কমাতেও সাহায্য করে।
প্রদাহ কমায়: এতে থাকা উদ্ভিদ-ভিত্তিক পুষ্টি উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
বার্ধক্যের লক্ষণ কমায়: কালো চালের উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী, বিশেষত অ্যান্থোসায়ানিন এবং ভিটামিন ই, ত্বকের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা বলিরেখা, সূক্ষ্ম রেখা এবং বার্ধক্যজনিত অন্যান্য লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে।
প্রোটিন এবং আয়রনের উৎস: বাদামী চালের তুলনায় কালো চালে প্রোটিন এবং আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে। এক কাপ (১০০ গ্রাম) রান্না করা কালো চালে প্রায় ২.৪ মিলিগ্রাম আয়রন এবং ৮.৮৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ: কালো চালে বি ভিটামিন (যেমন রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন এবং ফলিক অ্যাসিড), ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং জিঙ্কের মতো খনিজ পদার্থও পাওয়া যায়, যা শক্তি উৎপাদন, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কালো চালের এই সব পুষ্টিগুণ এটিকে একটি অসাধারণ স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কালো চাল যুক্ত করে আপনি এই সমস্ত উপকারিতা লাভ করতে পারেন।