“খৈ” গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এবং জনপ্রিয় একটি খাবার। একটা সময় খৈ ছিল গ্রাম বাংলায় অতিথি আপ্যায়নের মূলে। খৈ-এর সাথে গুড়, চিনি, আম-কাঁঠাল বা অন্য কোনো ফল মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়। গুড় বা নারিকেলের সাথে মিশিয়ে খৈ-এর মোয়া তৈরি করা হয়, যা খুবই জনপ্রিয়। খৈ একটি হালকা এবং স্বাস্থ্যকর জলখাবার। এটির সাথে দুধ-দই মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই সকালের নাস্তায় কর্নফ্লেক্স বা ওটসের বিকল্প হিসেবে খৈ বেছে নেন। গ্রামবাংলায় এর ব্যবহার যেমন আছে, তেমনি এর কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও রয়েছে। ধানের খই খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়। সাধারণত যাদের হজমে সমস্যা তারা ধানের খই খেলে উপকার পাবে।
তোহফার খই যেভাবে তৈরী হয়ঃ-
- আমাদের খৈ গ্রাম-বাংলার হাতে ভাজা খৈ। খই তৈরিতে কাঁচা ধান রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়।
- মাটির চুলায় ও মাটির হাঁড়িতে বালি গরম করে সেই বালিতে শুকনা ধান বাঁশের কাঠি বা পাট কাঠি দিয়ে নাড়ার এক পর্যায়ে তৈরি হয় খই।
- এরপর খইয়ের সঙ্গে লেগে থাকা ধানের খোসা ও বালি চালুনিতে চেলে আলাদা করা হয়।
- আমাদের হাতে ভাঁজা খৈ শতভাগ ধুলো-বালি, কণা মুক্ত।
খৈ-এর উপকারিতাঃ
- যাদের হজমের সমস্যা আছে, তারা খই খেলে উপকার পেতে পারেন। এটি গ্লুটেন-মুক্ত হওয়ায় হজম সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য খুবই ভালো।
- খই-এ ক্যালোরি ও ফ্যাট কম থাকে, কিন্তু এটি পেট অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখে। তাই ওজন কমাতে এটি একটি ভালো খাবার।
- খই-এ প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘এ’ এবং ফাইবার থাকে। এই ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং রক্তে চিনির পরিমাণ সহজে বাড়তে দেয় না।
- যেহেতু খই রক্তে শর্করা বাড়ায় না, তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি ভালো খাবার।
তবে মনে রাখতে হবে, খৈ এর উপকারিতা প্রধানত এটি কিভাবে খাওয়া হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে। অতিরিক্ত চিনি বা গুড় দিয়ে খেলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা কমে যেতে পারে।