বাংলাদেশে অনেক ধরনের চালের মধ্যে লাল চাল অন্যতম জনপ্রিয়। লাল চাল সাধারণত এর প্রাকৃতিক লালচে বা বাদামি রঙের জন্য পরিচিত। এই চালটি বিশেষ করে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং এর অনেক গুণাগুণ আছে। লাল চালের উপরের স্তর, যাকে চালের তুষ বা ফাইবার বলা হয়, এই ফাইবার বাদামী বা লাল রঙের হয়। যখন চাল প্রস্তুত করা হয়, তখন এই তুষ বা ফাইবারের স্তরটি অক্ষত রাখা হয়, যা চালকে তার প্রাকৃতিক রং দেয় এবং পুষ্টিগুণ ধরে রাখে।
একবার যদি গভীরভাবে চিন্তা করতাম যে কাটিং- পলিশিং সাদা চাল অথবা মিনিকেট চালের ভাত খাওয়া কতটা ক্ষতিকর তাহলে আমরা ঐ ভাত খাওয়াই ছেড়ে দিতাম। আদি জাতের লাল চাল গুলোর পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে আমাদের এ ধরণের চালে অভ্যস্ত হওয়া উচিৎ, এতে দীর্ঘ সময়ের জন্য সুফল পাবেন ইনশাআল্লাহ্।
লাল চালের স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: এতে থাকা ফাইবার গ্লুকোজের শোষণ প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: লাল চাল হজম হতে বেশি সময় নেয়, ফলে এটি পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস: লাল চালের ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- হাড়ের স্বাস্থ্য: এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লাল চালের পুষ্টিগুণঃ
- ফাইবার: লাল চালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন বি: এতে আছে ভিটামিন বি১, বি৩ এবং বি৬, যা শরীরের বিপাকক্রিয়া এবং স্নায়ুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- খনিজ উপাদান: ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, এবং আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান এতে পাওয়া যায়।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: লাল চালে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
রান্নার পদ্ধতিঃ লাল চাল রান্না করতে কিছুটা বেশি সময় লাগে। রান্নার আগে চাল ভালোভাবে ধুয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে তা দ্রুত সেদ্ধ হয়। সাদা চালের মতোই এটি ভাত, খিচুড়ি, পোলাও, এবং বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানানোর জন্য ব্যবহার করা যায়।

