কুমড়ার বীজ, যা পেপিটাস নামেও পরিচিত, একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। ছোট এই বীজে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা শরীরের বিভিন্ন উপকার করে।
কুমড়া বীজের ব্যবহার
কুমড়ার বীজ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। এটি কাঁচা, হালকা ভেজে বা বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- ভাজা বীজ: কুমড়ার বীজ হালকা ভেজে স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। এতে সামান্য লবণ বা মশলা যোগ করলে স্বাদ আরও ভালো হয়।
- সালাদ ও স্যুপে: সালাদ বা স্যুপের উপরে সাজানোর জন্য কুমড়ার বীজ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়ায়।
- স্মুদি ও দইয়ের সাথে: সকালের নাস্তায় স্মুদি বা দইয়ের সাথে কুমড়ার বীজ মিশিয়ে খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে।
- রান্নায়: বিভিন্ন তরকারির সাথে গুঁড়ো করে মিশিয়ে অথবা সরাসরি যোগ করে রান্নার পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা যায়।
- বেকিংয়ে: রুটি, কেক বা কুকিজ তৈরির সময় কুমড়ার বীজ ব্যবহার করা যায়।
- কুমড়ার বীজের তেল: কুমড়ার বীজের তেলও পাওয়া যায়, যা সালাদ ড্রেসিং বা রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয়।
কুমড়া বীজের উপকারিতা
- পুষ্টির ভান্ডার: কুমড়ার বীজ প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, ভিটামিন E এবং ভিটামিন K-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানে ভরপুর।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কুমড়ার বীজে ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- হজম উন্নত করে: উচ্চ মাত্রার ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- ভালো ঘুমের সহায়ক: কুমড়ার বীজে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। এই হরমোনগুলো মানসিক চাপ কমিয়ে ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
- প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এতে থাকা জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: কুমড়ার বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
- চুল ও ত্বকের যত্ন: ভিটামিন E এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলকে ঝলমলে ও ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে।
- প্রোস্টেট স্বাস্থ্যের উন্নতি: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কুমড়ার বীজ পুরুষদের প্রোস্টেট গ্রন্থির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: এতে থাকা প্রোটিন এবং ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।
তবে, যে কোনো খাবারের মতো, কুমড়ার বীজও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। সাধারণত, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন ২০-৩০ গ্রাম বা ২-৩ টেবিল চামচ কুমড়ার বীজ খেতে পারেন।

